অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের অনলাইন কনটেন্টের ভালো পাঠক হয়ে উঠতে সাহায্য করা

Meta

2 মার্চ, 2022

তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া দুর্দান্ত উৎস হতে পারে, তবে এর মানে এই নয় যে এখানে পাওয়া সব তথ্যই সঠিক বা বিশ্বাসযোগ্য। খারাপ কনটেন্টের মধ্যে থেকে ভালোটা বেছে নিতে, মা-বাবাদের তাদের কিশোর-কিশোরী সন্তানকে তার অনলাইন মিডিয়া লিটারেসি অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করতে হবে।

প্রাপ্তবয়স্কদের মতো, কিশোর-কিশোরীদেরও দক্ষ হতে হবে যাতে তারা বুঝতে পারেন যে কোন তথ্য বিশ্বাসযোগ্য ও কোনটি নয়, মিডিয়াতে বা ছবিতে কারসাজি করা হয়েছে কি না এবং সত্যি নয় বা যাচাই করা যায় না এমন কনটেন্ট অনলাইনে শেয়ার না করার মতো ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

মিডিয়া লিটারেসি অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট সম্পর্কিত জ্ঞান লাভের পরামর্শ

আপনি যে তথ্য দেখছেন তা বিশ্বাসযোগ্য কি না, তা কখনই সরাসরি জানা সহজ হয় না। তবে বাস্তব জগতের মতো অনলাইনেও, কোন তথ্য বা কনটেন্ট সঠিক আর বিশ্বস্ত এবং কোনটি নয়, সেই সম্পর্কে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য আপনি কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ নিতে পারেন।

আসুন সেই প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো দিয়ে শুরু করা যাক: কোনো কনটেন্টের সাথে জড়িত হওয়ার বা তা শেয়ার করার আগে, নিচে দেওয়া পাঁচ ধরনের প্রশ্নের সাহায্যে আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানকে কনটেন্ট বুঝতে সাহায্য করুন: কে বা কারা? কী? কোথায়? কখন? এবং কেন?

  • কনটেন্ট কে তৈরি করেছেন? আপনি কি তাকে চেনেন? চিনলে, কীভাবে চেনেন? তিনি কনটেন্টটি যে উৎস থেকে শেয়ার করেছেন, সেটি কী? আপনি মূল উৎস যত ভালো করে জানবেন, কনটেন্ট সম্পর্কে আপনার তত বেশি তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অন্যান্য উৎস থেকে কী জানতে পারেন? কোনো কনটেন্ট শেয়ার করার আগে, সেই সম্বন্ধে একই তথ্য জানাচ্ছে এমন আরও বিশ্বাসযোগ্য উৎস পান কি না দেখুন। কনটেন্টের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য অন্যান্য উৎস থেকে প্রমাণিত তথ্য পেলে, তা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • কনটেন্ট কোথা থেকে পাওয়া গেছে? যে সংবাদ সূত্র বা খবরের উৎস সততার সাথে খবর পরিবেশন করে, তারা কনটেন্টের উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছ ভাবে তথ্য দেবে। সংবাদ সূত্রের "পরিচয়" পেজ থাকলে তা আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে দেখুন এবং সেটি কতদিনের পুরানো ও তাদের কাজ করার ইতিহাস বিশ্বাসযোগ্য কি না দেখুন।
  • কখন এটা তৈরি করা হয়েছে? কখনও কখনও পুরানো ছবি, উদ্ধৃতি বা স্টোরি নতুন নতুন উপায়ে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় এবং এর ফলে ভুল তথ্য ছড়ায়। কনটেন্ট তৈরির আসল সময় জানা গেলে সেটির প্রসঙ্গ বুঝতে সুবিধা হয় এবং সেটির বিশ্বাসযোগ্যতার সম্ভাবনা বাড়ে।
  • কেন এটা তৈরি করা হয়েছে? কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করার কারণ সম্পর্কে ভাবুন। কিছু কনটেন্ট তৈরির উদ্দেশ্য হয় আমাদের কোনো কিছু সম্বন্ধে জানানো, কিছু কনটেন্টের উদ্দেশ্য হয় আমাদের হাসানো আবার কিছু কনটেন্টের কোনো উদ্দেশ্য থাকে না। কনটেন্ট তৈরির উদ্দেশ্য বুঝতে পারলে, সেটি বিশ্বাসযোগ্য কি না তা বোঝা সহজ হয়।

তবে মনে রাখবেন, এগুলো ছাড়াও আরও অনেক পরামর্শ আছে। ইন্টারনেটে কোন তথ্য বিশ্বাস করা যায় এবং কোন তথ্য বিশ্বাস করা যায় না, সেই সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের ভালো ধারণা তৈরি করতে সময় লাগবে। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে অনলাইনে সময় কাটানোর অভ্যাস করুন এবং তাকে এমন ভাবে গাইড করুন যাতে তিনি অনলাইনে যা পড়েন, তৈরি করেন, জড়িত হন বা শেয়ার করেন সেই সম্পর্কে যাচাই করে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সাহায্য করার আরও উপায়

অনলাইন কনটেন্ট কীভাবে ভালো করে যাচাই করতে হয়, সেই বিষয়ে কিশোর-কিশোরী ও অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের দক্ষতা বাড়াতে উপরে উল্লেখ করা পাঁচ ধরনের প্রশ্ন ব্যবহার করার সাথে আরও কয়েকটি উপায়ে তাদের সাহায্য করতে পারেন।

কথাবার্তা বলা চালিয়ে যান

মিডিয়া লিটারেসি অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট সম্পর্কে কীভাবে জানতে হয়, সেই অভ্যাস বাড়িতেই তৈরি হয়। এবং তা একবার করলেই হয় না, ধারাবাহিক ভাবে চালিয়ে যেতে হয়। কিশোর-কিশোরী ও অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা যাতে অনলাইন তথ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে পারেন, তার জন্য সাহায্য করতে মা-বাবাদের সময় লাগে এবং চেষ্টা করতে হয়। এই জানার অভ্যাসটি একসাথে করলে এবং সাধারণ কথা বলার মতো করে করলে, তা আরও বেশি কার্যকর হয়। তার সাথে নিচের বিষয়ে কথা বলুন, যেমন:

  • তিনি অনলাইনে কাদের ফলো করেন?
  • কোন ধরনের কনটেন্ট দেখেন ও শেয়ার করেন?
  • যে কনটেন্ট দেখেন, তা কীভাবে যাচাই করেন?
  • বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে, এমন তথ্য দেখলে কী করেন?
  • কনটেন্ট শেয়ার করার আগে, কনটেন্টের বিষয়ে ভাবতে সময় নেন কি?

মিডিয়া লিটারেসি অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট সম্পর্কে জানার জন্য অনুশীলন

বিশ্বাসযোগ্য উৎস কীভাবে চিনবেন, সেই সম্পর্কে আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে কাজ করার জন্য এখানে একটি উপায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই কাজটি করলে অনলাইনে উৎস ও তথ্য যাচাই করার অনুশীলন করতে আপনাদের সুবিধা হবে।

  • তথ্য খোঁজার জন্য আপনি বা আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান যে সাইট বা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন, সেই সাইট বা প্ল্যাটফর্মে গিয়ে জানার চেষ্টা করুন।
  • একসাথে দেখার জন্য কোনো আর্টিকেল, ব্লগ, ভিডিও বা তথ্যমূলক অন্য কনটেন্ট বেছে নিন।
  • খুঁজে দেখুন কনটেন্ট কে তৈরি করেছেন? কী? কোথায়? কনটেন্ট কেন তৈরি করা হয়েছে? সেই কনটেন্টের বিশ্লেষণ করুন এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য খোঁজার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করুন।

মনে রাখবেন, এই কাজটি আপনাদের অবশ্যই একসাথে করতে হবে।

এটা করতে সময় লাগবে, তবে আপনি সহায়তা করলে এবং দুজনে মিলে একটু অনুশীলন করলেই আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান অনলাইনে যে তথ্য দেখেন, তা যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা তিনি শিখতে পারবেন এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে যাওয়া আটকাতে সাহায্য করতে পারবেন।

আপনার লোকেশন হিসাবে নির্দিষ্ট কনটেন্ট দেখতে আপনি কি অন্য কোনো দেশ বা অঞ্চল বেছে নিতে চাইবেন?
পরিবর্তন করুন