ভালো ডিজিটাল আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করা

অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের শেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়গুলোর মধ্যে থেকে একটি হলো দৃষ্টান্ত তৈরি করা। কিশোর বয়সের সন্তানদের তাদের চারপাশের জগতের সাথে কীভাবে ইন্টার‍্যাক্ট করা উচিত তা জানতে মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের কার্যকলাপ ও আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবে আমরা বিভিন্ন উপায়ে কার্যকর আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করি। যেমন, পার্কে বেড়াতে গিয়ে আমরা হয়ত মাটিতে পড়ে থাকা কোনো আবর্জনা তুলে সেটা ডাস্টবিন ফেললাম। এক্ষেত্রে আমরা মুখে কিছু না বললেও, এই দৃষ্টান্ত থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখানো যায় যে ফেলে দেওয়া কোনো কিছু তা যদি আবর্জনা নাও হয়, তবুও সেটা ডাস্টবিন ফেললে সর্বজনীন স্থানকে পরিষ্কার রাখা যায় এবং এই কাজটি করে আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে কিশোর বয়সের সন্তানদের শেখানো যায়।

ডিজিটাল বিশ্বে কার্যকরী আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। মা-বাবা হিসাবে, আপনি হয়ত এমনভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন যা আপনার কিশোর বয়সের সন্তানের জন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করার ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। এর মধ্যে থাকতে পারে, Facebook-এ আপনি যে স্থানীয় ফুড ব্যাঙ্কটি ফলো করেন, সেটির হয়ত ডোনেশনের প্রয়োজন আছে বলে আপনি লক্ষ্য করেছেন এবং তাতে দান করার জন্য আপনার ফলোয়ারদের উৎসাহিত করতে অনলাইনে আপনি মেসেজ পোস্ট করেছেন। অথবা কোনো অভিজ্ঞতার বিষয়ে আপনার করা একটি পোস্ট হতে পারে যেখানে আপনি এমন একজনকে সমর্থন জানিয়েছেন যার সাথে ন্যায্য আচরণ করা হয়নি এবং অন্যদেরও তাকে সমর্থন জানাতে উৎসাহিত করেছেন।

তবে কার্যকর ডিজিটাল আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করার ক্ষেত্রে আরও একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আবর্জনা তুলে ডাস্টবিনে ফেলা বা দুহাতে মুদিখানার জিনিস থাকায় কোনো ব্যক্তি হয়ত দরজা খুলতে পারছেন না, তাই তার জন্য দরজা খুলে তাকে সাহায্য করার মতো ঘটনা দেখা এবং মা-বাবাকে কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেখা, এই সব কাজই শিশুদের কাছে একই রকম দেখায়। আমরা ইমেইল দেখছি না কি গেম খেলছি, না কি অনলাইনে পরিষেবা সংক্রান্ত কোনো কাজ করছি, যাই করি না কেন, যারা আমাদের দেখেন তারা শুধু এটাই দেখবেন যে আমরা কম্পিউটারের সামনে বসে আছি। আর এটি ভালো ডিজিটাল আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়ক নাও হতে পারে।

কীভাবে ভালো ডিজিটাল আচরণের দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হয়, সেই সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানলে এই সমস্যা সহজে সমাধান করা যায়। যেমন, আমরা অনলাইনে কাউকে সাহায্য করার সময় কী করছি, সেই সম্পর্কে আমাদের সন্তানদের জানানোর জন্য তাদের একটু সময় দিতে পারি; "আমাদের একজন প্রতিবেশী আগামীকাল ডাক্তার দেখাতে যাবেন। তিনি যাতে সেখানে সময় মতো পৌঁছাতে পারেন, সেই কারণে তাকে সাহায্য করতে আমি রাইড বুক করছি। আমিও তার সাথে যাব"। সম্ভব হলে, আমরা তাদেরকে অন্যকে সহায়তা করার ও অন্যের সেবা করার মতো আমাদের ডিজিটাল কার্যকলাপের সাথেও যুক্ত করতে পারি; "আগামী সপ্তাহে রক্তদান শিবিরের প্রচারের জন্য Facebook-এ একটা আমন্ত্রণ পোস্ট করছি - দেখতো এটা কেমন লাগছে?" আমাদের সহায়তামূলক ডিজিটাল কাজের এই আচরণগুলোকে দৃষ্টান্ত হিসাবে দেখালে, সেগুলো বর্তমানে ও ভবিষ্যতে ডিজিটাল দুনিয়াতে আমাদের কিশোর বয়সী সন্তানরা কেমন স্বভাবের মানুষ হবেন, তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে।

সম্পর্কিত বিষয়

আপনার লোকেশন হিসাবে নির্দিষ্ট কনটেন্ট দেখতে আপনি কি অন্য কোনো দেশ বা অঞ্চল বেছে নিতে চাইবেন?
পরিবর্তন করুন