সোশ্যাল মিডিয়া এবং গুজব
ইন্টারনেটে প্রচুর তথ্য রয়েছে এবং এর মধ্যে কোনটা সত্য ও বিশ্বস্ত আর কোনটা নয় তা অনেকটা সময় নিয়ে বিস্তর খেটেখুটে তবেই সম্যকভাবে জানতে পারা যায়৷ আর সবার মতো, অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদেরও অনলাইনে গুজব খুঁজে বের করার দক্ষতা থাকার দরকার আছে।
'গুজব' শব্দের কোনো একক সংজ্ঞা পাওয়া যায় না। কিন্তু এটা সাধারণভাবে বোঝা গেছে যে 'বিভ্রান্তি' থেকে "মিথ্যা তথ্য"-কে, এই হিসাবে আলাদা করা যায় যে এটা কাউকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয় না।
এক হিসাবে এটা সোশ্যাল মিডিয়াতে, এক প্রকার চাঞ্চল্যকর হেডলাইন বা ফোলানো-ফাঁপানো পোস্ট হিসাবে দেখানো যেতে পারে, যা মিথ্যা ধারণা তৈরি করার জন্য একটি বিষয়কে অপ্রাসঙ্গিক জায়গায় নিয়ে যায়। স্প্যামাররা ক্লিক-এর সংখ্যা বাড়াতে এবং অতিরিক্ত লাভ করার আশায় এটাকে ব্যবহার করে এবং দলীয় বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এটা নির্বাচন এবং জাতিগত সংঘাতে ব্যবহার করতে পারে।
গুজবের বিরুদ্ধে লড়াই করা অসম্ভব মনে হলেও এটা ছড়িয়ে পড়া আটকানোর জন্য লড়াই করতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি।
Meta-তে, গুজব থামাতে আমাদের কৌশল এর তিনটে অংশ রয়েছে:
গুজব ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে এই পদ্ধতি ডিজাইন করা হয়েছে এবং এটা জনগণের আলোচনা ইত্যাদিকে দমিয়ে না রেখে লোকজনকে এই বিষয়ে আগে থেকেই জানিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
এতে মা-বাবা ও অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ব্রিজওয়াটার স্টেট ইউনিভার্সিটির ম্যাক্সওয়েল লাইব্রেরির বিশেষভাবে উল্লিখিত ধারণাগুলি ধার করে,, এখানে আরও কিছু টিপস দেওয়া হল যা আপনাকে এবং আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানকে সামাজিক মিডিয়াতে পোস্ট করা তথ্যের যথার্থতা বিচার করতে সাহায্য করতে পারে:
পরামর্শ #1: আরও গভীরে গিয়ে খুঁজতে হবে
শুধুমাত্র শিরোনাম এবং স্টোরি থেকে উদ্ধৃত অংশই আমাদের কিছুদূর পর্যন্তই জানাতে পারে। আমরা যা দেখি বা পড়ি তার সম্পূর্ণ প্রসঙ্গ-সূত্র পেতে পোস্টের আওতার বাইরে দেখা বা মূল উৎস উপাদানের লিঙ্ক খুঁজে দেখাও সহায়ক হয়ে থাকে।
পরামর্শ #2: ইন্টারনেট ব্যবহার করুন
ইতিমধ্যেই কোনো স্টোরিকে তথ্য-পরীক্ষকরা ফ্ল্যাগ না করে থাকলে, প্রায়শই এ সম্পর্কে দ্রুত অনুসন্ধান চালালে এটি সঠিক কি না তা জানা যায়। খবরের নির্ভরযোগ্য উৎস নিশ্চয়ই অন্যান্য বৈধ খবর পরিবেশনের সাইটের সঙ্গেও লিঙ্ক করা থাকবে।
পরামর্শ #3: আপনার বিচার-বিবেচনা ব্যবহার করুন
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: আমি যা পড়ছি তার মূল-সূত্র কতটা বিশ্বাসযোগ্য? লেখকের উদ্দেশ্য কী ছিল? এটা কি কোনো নিউজ স্টোরি নাকি কোনো মতামতের নমুনা? সত্য নির্ণয়ের জন্য তেমন কোনো একক সূত্র না থাকলেও, কখনো-কখনো এর জন্য খানিকটা বেশিই খাটতে হয়।
পরামর্শ #4: গবেষণা সংক্রান্ত উদ্ধৃতি
ইন্টারনেটে প্রায়ই এমন বহু উদ্ধৃতি দেখা যায় যা যেসব খ্যাতনামাদের উদ্ধৃতি বলে পরিচিতি পায়, আসলে তাঁরা কখনোই সেসব বলেননি। যে কোনো উদ্ধৃতি শেয়ার করার আগে, সেই বিষয়ে ইন্টারনেটে খোঁজ খবর নিন।
পরামর্শ #5: প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন বা অন্যান্য "ক্লিকবেট" সম্পর্কে জানুন
ভুল তথ্য থাকা কিছু বিজ্ঞাপন এমন হয় যে আপনি সেগুলোর ওয়েবসাইটে ক্লিক করতে বাধ্য হন আর সেই কারণেই সেগুলোর বিজ্ঞাপন আকর্ষণীয় করে বানানো হয়। তাই, খারাপ মানের ও প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন দেখলে সাবধান হওয়া উচিত যে তা বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে।
পরামর্শ #6: চাঞ্চল্যকর কনটেন্ট সম্পর্কে সাবধান থাকুন
ভুল ব্যাকরণ, বিস্ময়বোধক চিহ্নের খুব বেশি ব্যবহার, বড় হাতের অক্ষরে লেখা বাক্যাংশ এবং অত্যন্ত আবেগতাড়িত আবেদন থাকলে, সেই সম্পর্কে সাবধান হন। অনেক ভুল তথ্য শুধুমাত্র দর্শককে আকর্ষণ করার জন্যই তৈরি করা হয়, সেটির উদ্দেশ্য কোনো কিছু জানানোর জন্য হয় না।
পরামর্শ #7: মূল কথা হলো, সব কিছুই সমালোচনা করার দৃষ্টিভঙ্গিতে পড়ুন
কিছু শেয়ার করার আগে, শুধুমাত্র চাঞ্চল্যকর শিরোনামই নয়, পুরো ঘটনাটিও ধীরেসুস্থে সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গিতে পড়া খুব জরুরি।
আমরা যেহেতু আলোচনা করছি যে, কীভাবে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের অনলাইন কনটেন্ট ভালো করে পড়তে সাহায্য করা যায়, সেক্ষেত্রে নিচের প্রশ্নগুলো ব্যবহার করেও বিশ্বাসযোগ্য উৎস চেনা যায়: কে বা কারা? কী? কোথায়? কেন? কখন?
বিশ্বাসযোগ্য উৎসের শনাক্তকরণ সম্পর্কে আরও জানতে, নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো দেখুন:
কেউ ভুল তথ্য পোস্ট করলে তাকে সেই ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে বোঝানো কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে তিনি যদি ফ্রেন্ড বা পরিবারের সদস্য হন। এমন ক্ষেত্রে, খোলাখুলিভাবে কথাবার্তা বললে বা অলোচনা করলে এবং বিশ্বাসযোগ্য উৎসের সঠিক তথ্য শেয়ার করলে তা ভালো হয়।
ভুল তথ্য সম্পর্কে ইন্টার্যাকশনগুলো নেভিগেট করার সময় আপনার কিশোর বয়সী সন্তানের যা মনে রাখা উচিত, এখানে তার কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:
যেহেতু ভুল তথ্য সাধারণত অন্য মানুষের ভাবাবেগকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাই যে ব্যক্তি এই ধরনের কনটেন্ট শেয়ার করেছেন তার সাথে কথা বলা কঠিন আর অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হতে পারে। এই সমস্ত আবেগের বিষয়ে সচেতন হয়ে এবং অন্যরা কেমন অনুভব করতে পারেন, সেই সম্পর্কে সহানুভূতিশীল হয়ে কথা বললে তা কাজের হয়।
সবার সামনে না বলে, আলাদাভাবে কথা বললে ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো যায়। বিশ্বাসযোগ্য উৎসের সর্বশেষ খবর দেওয়ার সময় নম্র আর ইতিবাচকভাবে তা শেয়ার করুন।
আমাদের প্রযুক্তি জুড়ে কীভাবে Meta ভুল তথ্য ছড়িয়ে যাওয়া কমাচ্ছে, সেই সম্পর্কে আরও জানুন।