অনলাইন প্রাইভেসির গুরুত্ব

অনলাইন প্রাইভেসি সম্পর্কে আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে কথা বলার 5টি পরামর্শ

অনলাইন প্রাইভেসির বিষয়ে কথা বলা শুরু করা সহজ না হলেও, তা বলা খুব জরুরি। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে কীভাবে কথা বলবেন, সেই বিষয়ে এখানে কিছু পরামর্শ রয়েছে।

1। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান যেসব তথ্য নিয়ন্ত্রণ করতে চান, সেই অনুযায়ী তাকে প্রাইভেসি সেটিংস বুঝতে সাহায্য করুন

আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান (বা যে কেউ!) সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা শুরু করতে চাইলে, তার প্রাইভেসি সেটিংস কী এবং কীভাবে তিনি নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী তা পরিবর্তন করতে পারবেন, তা তাকে অবশ্যই জানতে হবে। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানের সাথে কথা বলার সময়, প্রাইভেসি সেটিংস সম্পর্কে লোকজনের যেসব প্রাথমিক প্রশ্ন থাকে, সেই সব প্রশ্নের মাধ্যমে তাকে গাইড করুন, যেমন:

আমি যা শেয়ার করছি তা কোন অডিয়েন্স দেখতে পাবেন, সেটা কী এই প্রাইভেসি সেটিংস আমায় বেছে নিতে দেবে?
এই সমস্ত সেটিং আমায় কি ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন, নাম, লোকেশন, ফোন নম্বর বা ইমেইল অ্যাড্রেস) গোপন রাখতে সাহায্য করবে?
আমি যাদের চিনি না তারা সহ — কারা আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন, আমি কি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব?
এমন সেটিংস আছে কী, যা অ্যাপকে আমার ফিজিক্যাল লোকেশন ট্র্যাক করা থেকে আটকাবে?

Meta-র বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রাইভেসি সেটিংস সম্পর্কে আরও জানুন:

2। আপনার ও আপনার পরিবারের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান কোন ধরনের অনলাইন প্রাইভেসি চান, সেই সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানতে চান

Meta প্রযুক্তিতে অ্যাকাউন্ট আছে এমন যে কেউ এই সকল সেটিংস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যেমন: কে তাদের কনটেন্ট দেখতে পাবেন এবং কে তাদের ফ্রেন্ড বা ফলোয়ারের লিস্টে থাকবেন। কিশোর-কিশোরীরা তাদের পিতামাতা এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য গোপন রাখতে পারে এ বিষয়ে প্রতিটি পরিবারের আলাদা নিয়ম, নির্দেশিকা এবং দৃষ্টিভঙ্গি আছে — এবং প্রত্যেক কিশোর-কিশোরীর প্রাইভেসির প্রত্যাশা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। আপনার কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের প্রাইভেসিকে গুরুত্ব প্রদানের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা একটি চ্যালেঞ্জ। বিশ্বাসের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ার মূল মন্ত্র হলো প্রাইভেসি সম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা কী এবং সেই সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতার বিষয়ে তার মূল্যবোধ নিয়ে নিয়মিতভাবে তার সাথে কথা বলুন (যেমন, অনলাইনে সে কী শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং আপনি তার জন্য কী নিয়মাবলী সেট করেছেন)।

3। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কোন প্রাইভেসি সেটিংস রেখেছেন বা রাখবেন বলে ভাবছেন, তা জিজ্ঞাসা করুন

প্রথমে, তাকে প্রশ্ন করতে পারেন যে তার অ্যাকাউন্ট সবার জন্য উপলভ্য থাকবে না কি কোনো বিশেষ গ্রুপের জন্য উপলভ্য থাকবে। যেমন, Instagram-এর অ্যাকাউন্ট পাবলিক বা ব্যক্তিগত উভয়ই হতে পারে। অনলাইনে তার পোস্ট করা কনটেন্ট কারা দেখতে ও ইন্টার‍্যাক্ট করতে পারবেন, এই বিষয়ে তার নিয়ন্ত্রণ আছে তা বুঝতে পারলে সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি সুরক্ষিত ভাবে নিজের মতো করে প্রাইভেসি সেটিংস সাজাতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানকে তার প্রাইভেসি এবং ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করার জন্য Instagram বিভিন্ন টুল দেয়। যখন 16 বছরের কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরা (বা নির্দিষ্ট কিছু দেশে 18 বছরের কম কেউ) Instagram-এ সাইন আপ করেন, তখন তাদের অ্যাকাউন্ট আপনা-আপনি ব্যক্তিগত হিসাবে সেট করা হয়। তারা যদি তারপর অ্যাকাউন্টটিকে পাবলিক করতে চায়, তাহলেও তারা অ্যাপ সেটিংয়ে গিয়ে ফলোয়ার সরাতে পারবে, তাদের পোস্টে কে কে কমেন্ট করতে পারবেন তা বেছে নিতে পারবে এবং তার অ্যাক্টিভিটি স্ট্যাটাস বন্ধ করে রাখতে পারবে (যাতে লোকেরা দেখতে না পান যে তারা অ্যাপে কখন সক্রিয় আছেন)।

4। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানকে জিজ্ঞাসা করুন যে তিনি কোন তথ্য ব্যক্তিগত রাখতে চান এবং অনলাইনে অন্যদের সাথে কী শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন

ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করার ক্ষেত্রে, বিভিন্ন লোকের স্বাচ্ছন্দ্য বোধের মাত্রা বিভিন্ন হয়। কিশোর-কিশোরীরা বড় হওয়ার সাথে সাথে যখন নিজেদেরকে নিয়ে এবং তারা কোন জিনিসকে গুরুত্ব দেন তা নিয়ে আরও বিশদে জানেন, তখন তাদের কাছে অনলাইন প্রাইভেসির সংজ্ঞা অনেকাংশে পরিবর্তিত হতে পারে। তাদের কোন ধরনের তথ্য (যেমন, তাদের ফোন নম্বর, ঠিকানা, শিডিউল, লোকেশন ও অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য) সবার সাথে শেয়ার করা উচিত বা উচিত নয় এবং কীভাবে তারা আরও বেশী ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বিকল্প চালু করতে পারেন, সেই বিষয়ে কিছু প্রাথমিক নিয়ম তৈরি করা জরুরি। Instagram-এ কিশোর-কিশোরীরা ক্লোজ ফ্রেন্ড লিস্ট তৈরি করতে এবং শুধুমাত্র সেই লিস্টে থাকা লোকেদের সাথে তার স্টোরি শেয়ার করতে পারেন — তিনি যে কোনো সময় এই লিস্টটি এডিট করতে পারবেন। এর ফলে কিশোর-কিশোরীরা তাদের বাছাই করা ছোট গ্রুপের মধ্যেই নিজেদের বেশি ব্যক্তিগত মুহূর্ত শেয়ার করতে পারবেন।

5। আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তানকে নিয়মিত প্রাইভেসি চেকআপ করতে উৎসাহ দিন

রেজিস্ট্রেশনের সময়ে অনলাইন প্রাইভেসি বেছে নেওয়া বন্ধ হয় না। কারণ উপলভ্য প্রাইভেসি সেটিংসও ঠিক আমাদের পছন্দের মতোই সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে থাকে, আপনার কিশোর বয়সী সন্তানের সাথে নিয়মিতভাবে তার প্রাইভেসি সেটিংস রিভিউ করার ও প্রয়োজন মতো তা পরিবর্তন করার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলুন।

কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রাইভেসি সংক্রান্ত অতিরিক্ত পরামর্শ

Instagram-এ 16 বছরের নিচে (কিছু দেশে 18 বছরের নিচে) যারাই সাইন আপ করেন, তাদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট ডিফল্টভাবে ব্যক্তিগত করা হয়। আমরা চাই অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা যেন সহজে নতুন ফ্রেন্ড বানাতে পারেন এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে পারেন, তবে অযাচিত DM (ডাইরেক্ট মেসেজ) ও অপরিচিত লোকের কমেন্টের মোকাবিলা করার জন্য আমরা তাদের সাহায্য করতে চাই। এই কারণেই, আমরা মনে করি অ্যাকাউন্ট ব্যক্তিগত থাকলেই সবচেয়ে ভালো।

তবে, আমরা এখনও লক্ষ্য করি যে কিছু অল্পবয়সী ক্রিয়েটররা ফলো করা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে, কমিউনিটি তৈরি করতে বা তারা যে বিষয়ে চিন্তাশীল তা সমর্থন করতে পাবলিক অ্যাকাউন্টকেই বেছে নিতে চান। তাই আমরা এই বিকল্পটি বেছে নেওয়ার অর্থ বুঝিয়ে দেবার পরেই তাদের জন্য এটিকে উপলভ্য করে থাকি৷

আপনি ও আপনার কিশোর-কিশোরী সন্তান সংযুক্ত হওয়ার এবং অনলাইনে আরও বেশি করে শেয়ার করার সাথে সাথে, আপনার কাছে প্রাইভেসি মানে কী এবং কীভাবে পোস্ট করার আগে সূক্ষ্মভাবে চিন্তাভাবনা করতে হয়, সেই বিষয়ে কথোপকথন চালিয়ে যান।

ফিচার ও টুল

দৈনিক সময়সীমা সেট করা

Instagram-এ তত্ত্বাবধান টুল

স্লিপ মোড চালু করা